fbpx
Tin Certificate

(TIN Certificate) টিন সার্টিফিকেট কী, কেন ও কীভাবে করতে হয়?

What is a TIN Certificate?

টিন বা টিআইএন-এর পূর্ণরূপ হলো, ট্যাক্সপেয়ার আইডেনটিফিকেশন নাম্বার। এটি একটি বিশেষ নাম্বার, যার সাহায্যে বাংলাদেশে করদাতাদের শনাক্ত করা হয়। অর্থাৎ, টিআইএন বা টিন সার্টিফিকেট একজন করদাতার পরিচয়পত্রের মতোই কাজ করে। করদাতা হিসেবে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চালু করেছে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে কয়েকটি সহজ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার মাধ্যমে আপনি একটি ডিজিটাল টিন সার্টিফিকেট পাবেন। এখানে আপনাকে ১২ ডিজিটের একটি টিন নাম্বার প্রদান করা হবে।

যারা আগে টিন সার্টিফিকেট করেছেন কিংবা যাদের টিন নাম্বার ১২ সংখ্যার কম, তাদের নতুন টিন সার্টিফিকেট করতে হবে। অর্থাৎ, তারা রি-রেজিস্ট্রেশন করে ১২ ডিজিটের টিন নাম্বার গ্রহণ করবেন।

TIN means Tax Identification Number (TIN). Where e-TIN means Electronic Tax Identification Number (e-TIN). It’s a 12 digit Number. National Board of Revenue (NBR) is the authority who provide the TIN Certificate in Bangladesh. To obtain Tax Identification Number, one can apply either in manually or electrically through National Board of Revenue (NBR). Previously Tin Certificate was issued by NBR only through manual system and it was a 10 digit Number. To speed up the whole process NBR has introduced an online system for obtaining Tin Certificate, which is known as e-TIN. 

When do you need a TIN Certificate?

  1. বছরে আপনার উপার্জন যদি আয়কর সীমার ওপরে হয়, তবে আপনাকে ইনকাম ট্যাক্স দিতে হবে, তার আগে আপনাকে অবশ্যই টিন সার্টিফিকেট করে নিতে হবে।
  2. ব্যবসায়ের জন্য ট্রেড লাইসেন্স করতে বা নবায়ন করতে।
  3. কোন ব্যবসায়িক সমিতি বা ব্যবসায়ীদের কোন নিবন্ধিত সংগঠনের সদস্য হতে।
  4. কোন কোম্পানির শেয়ার কেনার জন্য।
  5. রাইড শেয়ারিং কোম্পানিতে গাড়ি দিতে।
  6. নিজের কোম্পানি নিবন্ধিত করতে।
  7. ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড পেতে চাইলে।
  8. ব্যাংক লোন এর আবেদন করতে চাইলে।
  9. সিটি কর্পোরেশন এর ভেতরে কোন জমি, ভবন বা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন করতে।

এছাড়াও আরও অনেক কারণে টিন সার্টিফিকেট দরকার হতে পারে।

Documents Needed for obtaining TIN Certificate in Bangladesh?

টিন সার্টিফিকেট  ( TIN Certificate) করতে যা যা লাগবেঃ 

১. আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র 

২. আবেদনকারীর মোবাইল নাম্বার 

৩. আবেদনকারীর পিতা ও মাতার নাম 

৪. আবেদনকারীর স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা 

৫. কোম্পানীর ক্ষেত্রে RJSC (আরজেএসসি) নিবন্ধন নাম্বার ইত্যাদি

How to apply for TIN Certificate in Bangladesh?

নতুন নিয়ম অনুসারে আয়কর নিবন্ধনধারীকে প্রথমেই আয়কর ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে হবে। আয়কর ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে পুনরায় আয়কর সাইটে লগইন করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে টিন সার্টিফিকেটের জন্য আবেদনপূর্বক টিন সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হবে।

Get Help from SME Vai

টিন সার্টিফিকেট করতে কত টাকা লাগে?

টিন সার্টিফিকেট করতে কোন লিগ্যাল ফী দরকার হয় না। আপনি আয়কর ওয়েবসাইট থেকে নিজেই করে নিতে পারেন আপনার টিন সার্টিফিকেট এর জন্য কোন ফী লাগে নাহ।

টিন থাকলেই ট্যাক্স দিতে হবে কি?

টিন থাকলেই ট্যাক্স দিতে হবে কথাটি সঠিক নয়। টিন থাকলে আপনাকে ট্যাক্স রিটার্ন দিতে হবে তবে আপনার ট্যাক্স দিতে হবে কিনা সেটা নির্ভর করছে আপনার করযোগ্য আয়ের পরিমানের ওপর।

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার নিয়ম কি?

টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার জন্য প্রথমে আপনাকে পর পর ৩ বছর শুন্য আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এরপর আপনার Taxes Circle এর উপ-কর কমিশনার বরাবর উপযুক্ত কারণসহ টিন সার্টিফিকেট বাতিল করার দরখাস্ত করতে হবে। আবেদনের সাথে পূর্বের দাখিল করা রিটার্নের রিসিট, টিন সার্টিফিকেট ও এনআইডি কার্ডের কপি জমা দিতে হবে।

বাতিল করা টিন সার্টিফিকেট সচল করা যাবে কি?

জি, পূর্বে বাতিল করা টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজনে আবার সচল করা যাবে কিন্তু একজন ব্যক্তি নতুন করে কোন টিন সার্টিফিকেট করতে পারবে নাহ।

একজন ব্যক্তি একাধিক টিন নম্বর নিতে পারবে কি?

না একজন ব্যক্তি একাধিক টিন নম্বর নিতে পারবে না। একটি এনআইডি কার্ডের বিপরীতে একটি টিন নম্বর দেওয়া হয়।

Relevant Article

Trade License Renewal

Trade License Renewal Process | ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম

Table of Contents

ট্রেড লাইসেন্স করার পর প্রতি বছর নবায়ন করতে হবে। পুরাতন ট্রেড লাইসেন্স দেখিয়ে প্রতি বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন (Trade License Renewal) করতে হবে। যে অফিস থেকে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হবে সেই অফিসেই নির্ধারিত ফি প্রদান করে নবায়ন করতে হবে।

ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন এমন একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া যেটি প্রতিটি ব্যবসার জন্য এক বছর পর পর করা জরুরি। কেননা ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের মাধ্যমে প্রতিটি ব্যবসার লাইসেন্স এর কার্যকারিতা এবং ব্যবসার বৈধতা বজায় থাকে। আপনি যদি আপনার ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন (Renew) না করেন, তাহলে আপনার ট্রেড লাইসেন্স এর বিপরীতে প্রতি মাসে আপনার ট্রেড লাইসেন্স ফি এর ১০% হারে জরিমানা যুক্ত হতে থাকবে অর্থাৎ পরবর্তীতে বছর শেষে ট্রেড লাইসেন্স হালনাগাদ করতে গেলে ১২০% জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স হালনাগাদ না করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স অথরীটি চাইলে আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে । সেক্ষেত্রে আপনাকে জরিমানা প্রদান করে ট্রেড লাইসেন্স হালনাগাদ করতে হবে।

প্রতিটি ট্রেড লাইসেন্স এর মেয়াদকাল শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে নবায়ন করতে হবে। 

ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে যা  যা জরুরি 

  • পূর্বের ট্রেড লাইসেন্স  
  • পূর্বের ট্রেড লাইসেন্স  ফি জমার রশিদ
  • ফি: লাইসেন্স নবায়ন ফি নতুন লাইসেন্সের সমপরিমাণ

ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে প্রয়োজনীয় খরচ ও সময় | Trade license renewal fee & time

লাইসেন্স নবায়ন ফি নতুন লাইসেন্সের সমপরিমাণ সাথে ৩০০০ টাকার উৎস কর প্রদান করতে হবে। অর্থাৎ প্রথমবার ট্রেড লাইসেন্স টি করতে আপনার যত টাকা খরচ হয়েছে নবায়ন করতে সেই টাকার সাথে আরও ৩০০০ টাকা যোগ করে হিসেব করবেন।

১-৩ কার্যদিবসের ভিতর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন হয়ে যায়।

আপনার লাইসেন্স টি নবায়ন করতে মোট কত খরচ হবে তা আপনি নিজেই হিসেব করে বের করতে পারবেন আমাদের এই Trade License Renewal Fee Calculator ব্যবহার করে।

 

কত তারিখের ভিতর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়? | When do we need to renew trade lincese?

একটি ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ ১লা জুলাই থেকে পরবর্তী বছর ৩০শে জুন পর্যন্ত থাকে। তারপরেই ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। এর মেয়াদকাল শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে কোন জরিমানা ছাড়া নবায়ন করা যাবে। সেই হিসাবে ৩০শে জুন ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ৩০শে সেপ্টেম্বরের ভিতর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে।

ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন পদ্ধতি | Process of trade license renewal

প্রতিটি নতুন ট্রেড লাইসেন্স-এর মেয়াদ থাকে এক বছর। স্বভাবতই ট্রেড লাইসেন্স এর কার্যকারিতা বহাল রাখতে হলে প্রতি বছরই ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়।

ট্রেড লাইসেন্স নতুন করার সময় যে সরকারি ফিগুলো প্রদান করা হয় তা হলো, ট্রেড লাইসেন্স ফি, সাইন বোর্ড ফি এবং এই দুটো মিলে যত টাকা হয় তার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট। আর ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের সময় এই খরচগুলোর সাথে যোগ হয় উৎস কর, যেটি সিটি করপারেশনের ক্ষেত্রে ৩,০০০ টাকা। ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার ক্ষেত্রে এটি কিছুটা কম হয়।

ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য যে অফিস থেকে ট্রেড লাইসেন্স করিয়েছেন সেই অফিসে আগের ট্রেড লাইসেন্সটি সহ যেতে হবে, সকল ফী প্রদান পূর্বক অফিসার আপনাকে একটি নতুন ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করবেন। এ ব্যপারে আপনি চাইলে SME Vai এর সহায়তা নিতে পারেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ভিত্তিক অফিসের ঠিকানা
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ভিত্তিক অফিসের ঠিকানা

ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে আরও কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর

ট্রেড লাইসেন্স কি প্রতি বছরই রিনিও করা লাগবে? যদি আমি ব্যবসায় বন্ধ রাখি তাও?

জি, আপনাকে প্রতি বছরই ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা লাগবে। আপনি যদি আপনার ব্যবসা বন্ধ করার পর ট্রেড লাইসেন্স সাসপেন্ড না করেন তাহলে প্রতি বছরই ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। যদি নবায়ন না করে থাকেন, তাহলে প্রতি মাসে ১০% হারে জরিমানা উক্ত ট্রেড লাইসেন্সের সাথে যুক্ত হতে থাকবে।

ট্রেড লাইসেন্স থাকলে কি প্রতি বছর কর দেওয়া বাধ্যতামূলক?  

ট্রেড লাইসেন্সের সাথে করের কোন প্রকার সম্পর্ক নেই। তবে যে যে পরিমাণ আয় করেন, তাকে বাংলাদেশী আয়কর নীতিমালা অনুযায়ী আয়কর রিটার্ন প্রদান করতে হবে। 

ট্রেড লাইসেন্স রিনিও করিনি ব্যবসাটাও কন্টিনিউ করা হচ্ছে না, সমস্যা হবে কি?

জি, ব্যবসায় কন্টিনিউ না করলে ট্রেড লাইসেন্স সাসপেন্ড করতে হবে। যদি ট্রেড লাইসেন্স সাসপেন্ড না করেন এবং রিনিউও না করে থাকেন, তাহলে প্রতি মাসে ১০% হারে জরিমানা দিতে হবে।

ব্যবসায় বন্ধ করতে চাইলে কি ট্রেড লাইসেন্স বন্ধ করতে হবে?  

জি, ব্যবসায় বন্ধ করতে চাইলে আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স বন্ধ করতে হবে। ট্রেড লাইসেন্স বন্ধ না করা হলে মেয়াদ উত্তীর্ণ লাইসেন্স এর উপর প্রতি মাসে ১০% হারে জরিমানা যুক্ত হতে থাকবে।

ট্রেড লাইসেন্স কিভাবে এবং কোথা থেকে নবায়ন করতে হয় ?

ট্রেড লাইসেন্স সাধারণত সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইস্যু এবং নবায়ন করা হয়। প্রতিটি ট্রেড লাইসেন্স সাধারনত ১ বছর এর জন্য ইস্যু করা হয়ে থাকে। প্রতি বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার ক্ষেত্রে পুরানো ট্রেড লাইসেন্স দেখিয়ে নতুন লাইসেন্স নিতে হয়।

ব্যবসায় বন্ধ করতে চাইলে ট্রেড লাইসেন্স কিভাবে বন্ধ করতে হবে?  

ব্যবসায় বন্ধ করতে চাইলে অবশ্যই ট্রেড লাইসেন্স সাসপেন্ড করতে হবে। এজন্য যেখান থেকে ট্রেড লাইসেন্স করেছেন সেখানেই অর্থাৎ সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করে ট্রেড লাইসেন্স বন্ধ করতে হবে।

এসএমই ভাই এর মাধ্যমে আপনার ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করিয়ে নিতেঃ


Trade License Registration Process

ট্রেড লাইসেন্স কি? ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম কি?

Table of Contents

ব্যবসা শুরু করার জন্য খুবই দরকারি একটি লিগ্যাল ডকুমেন্ট হল ট্রেড লাইসেন্স (Trade License)। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ এবং আইনবিরোধী। তাই প্রত্যেক ব্যবসায়ীর ব্যবসার শুরু করার পর পরই ট্রেড লাইসেন্স করে নেওয়া উচিত।

ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম

সবার প্রথমে নির্ধারিত আবেদন ফরমে আবেদন করতে হবে। আবেদন পত্রের সাথে ৩ কপি ছবি, ভাড়ার চুক্তি পত্র ও ভাড়ার রশিদ, কর পরিশোধের রশিদ সহ কর কর্মকর্তার বরাবর আবেদন করতে হয়। লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে মেমোরেন্ডাম এর কপি দাখিল করতে হয়। আবেদন পত্রের সাথে লিগ্যাল ফি জমা দিতে হবে। পরবর্তীতে লাইসেন্স সুপারভাইজার কর্তৃক সরেজমিনে তদন্ত করে সঠিক পাওয়া গেলে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে থাকে।

ট্রেড লাইসেন্স আবেদন করতে কি কি লাগে?

এক মালিকানা ব্যবসার ক্ষেত্রেঃ

– দোকান /অফিস ভাড়ার সত্যায়িত চুক্তিপত্রের ফটোকপি
– নিজের দোকান হলে ইউটিলিটি বিল এবং হালনাগাদ হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের ফটোকপি
– আবেদনকারির ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের কপি

যৌথ মালিকানার ক্ষেত্রেঃ
– দোকান /অফিস ভাড়ার সত্যায়িত চুক্তিপত্রের ফটোকপি
– নিজের দোকান হলে ইউটিলিটি বিল এবং হালনাগাদ হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের ফটোকপি
– ডিরেক্টরদের ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের কপি
– ২০০০ টাকা জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে পার্টনাশিপের অঙ্গিকারনামা/ শর্তাবলি জমা দিতে হবে

কোম্পানির ক্ষেত্রে

→ অফিস বা দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। জায়গাটি অংশীদারদের কারোর নিজের হলে ইউটিলিটি বিল এবং হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের ফটোকপি।

→ কোম্পানির সার্টিফিকেট অফ ইন-কর্পোরেশন

→ কোম্পানির মেমরেন্ডাম ও আর্টিকেল অফ এসোসিয়েশন

→ ম্যানেজিং ডিরেক্টরের তিন কপি ছবি

→ ম্যানেজিং ডিরেক্টরের জাতীয় পরিচয়পত্র

ফ্যাক্টরি/ কারখানার ট্রেড লাইসেন্স এ কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার?
→ পরিবেশের ছাড়পত্রের কপি
→ প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরি/ কারখানার পার্শ্ববর্তী অবস্থান বা স্থাপনার বিবরণসহ নকশা/ লোকেশন ম্যাপ
→ প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরি/ কারখানার পার্শ্ববর্তী অবস্থান বা স্থাপনার মালিকের অনাপত্তিনামা
→ ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র
→ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এর নিয়ম কানুন মেনে চলার স্বাক্ষরিত অঙ্গিকারনামা ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প

ট্রেড লাইসেন্স করতে প্রয়োজনীয় খরচ ও সময়

ব্যবসার ধরনের উপর ভিত্তি করে যেভাবে লাইসেন্স পরিবর্তিত হয় ঠিক সেভাবেই বিভিন্ন ব্যবসার লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের মধ্যেও বেশ তারতাম্য ঘটে।

সিটি কর্পোরেশন আদর্শ কর তফসিল, ২০১৬-এর বিধিমালা অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্সের এই খরচ-এর হার সমূহ নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া এর সাথে আকৃতি অনুসারে সাইনবোর্ড ফি, লাইসেন্স বই-এর খরচ ও এগুলোর উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট-এর খরচ আছে। ট্রেড লাইসেন্স-এর আনুষঙ্গিক খরচাদি আবেদন ফর্মে উল্লেখিত ব্যাংক সমূহে জমা দেয়ার মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।

আবেদন ফর্ম জমা দেয়ার দিন থেকে পাঁচ অথবা সাত কর্মদিবস এর মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যাবে।
ট্রেড লাইসেন্স ফি তালিকা

ট্রেড লাইসেন্স করার পদ্ধতি

ধাপ-১: সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে ব্যবসায়িক কেন্দ্রের জন্য সঠিক অঞ্চল নির্ধারণ করা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ভিত্তিক অফিসের ঠিকানা
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ভিত্তিক অফিসের ঠিকানা

ধাপ-২: আই ফর্ম ও কে ফর্ম নামে ট্রেড লাইসেন্স আবেদনের দুটি ভিন্ন ধরনের ফরম আছে। ছোট কিংবা সাধারণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য আই ফর্ম এবং বড় ব্যবসার ক্ষেত্রে কে ফর্ম সংগ্রহ করতে হয়। প্রতিষ্ঠানটি যে অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত সেই অঞ্চলের অফিস থেকেই এই ফর্মগুলো সংগ্রহ করা যাবে, যেগুলোর প্রতিটির দাম ১০ টাকা।

ধাপ-৩: সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে ট্রেড লাইসেন্স-এর ফি ভ্যাটসহ জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করতে হবে।

ধাপ-৪: ব্যবসার ধরন অনুযায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন ফর্মটির সাথে ব্যাংকে ফি জমা রশিদটি সংযুক্ত করে স্থানীয় সরকারের অফিসে জমা দিতে হবে।

ধাপ-৫: স্থানীয় সরকারের অধীভূক্ত আঞ্চলিক অফিস থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা ব্যবসায়িক কেন্দ্রটি পরিদর্শন করে অফিসে রিপোর্ট করবেন।

ধাপ-৬: পূর্ববর্তী প্রতিটি ধাপ সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে এই চূড়ান্ত পর্যায়ে ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যাবে সেই আঞ্চলিক অফিস থেকে।

ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন পদ্ধতি

প্রতিটি নতুন ট্রেড লাইসেন্স-এর মেয়াদ থাকে এক বছর। স্বভাবতই ট্রেড লাইসেন্স এর কার্যকারিতা বহাল রাখতে হলে প্রতি বছরই ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়।

ট্রেড লাইসেন্স নতুন করার সময় যে সরকারি ফিগুলো প্রদান করা হয় তা হলো, ট্রেড লাইসেন্স ফি, সাইন বোর্ড ফি এবং এই দুটো মিলে যত টাকা হয় তার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট। আর ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের সময় এই খরচগুলোর সাথে যোগ হয় উৎস কর, যেটি সিটি করপারেশনের ক্ষেত্রে ৩,০০০ টাকা। ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার ক্ষেত্রে এটি কিছুটা কম হয়।

আপনার লাইসেন্স টি নবায়ন করতে মোট কত খরচ হবে তা আপনি নিজেই হিসেব করে বের করতে পারবেন আমাদের এই Trade License Renewal Fee Calculator ব্যবহার করে।

ব্যবসাকে বৈধকরণের জন্য ট্রেড লাইসেন্স একটি অপরিহার্য সনদ। ট্রেড লাইসেন্স দেয়া এবং এর নবায়ন স্থানীয় সরকারের কর আদায়ের একটি মাধ্যম। এটি ছাড়া যে কোন ব্যবসা প্রতারণার সামিল হবে। এ অপরাধে এমনকি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতারণার হিসেবে দেওয়ানী বা ফৌজদারি মামলাও হতে পারে। তাই সঠিক ও বৈধ ভাবে ব্যবসা পরিচালনায় ট্রেড লাইসেন্স-এর কোন বিকল্প নেই।

ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে আরও কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর

অনলাইনে ব্যবসা করতে কি ট্রেড লাইসেন্স তৈরী করতে হবে?

জী, যেকোন ব্যবসা করতে হলেই ট্রেড লাইসেন্স তৈরী করতে হবে। তবে অনলাইন মাধ্যম যেমন ফেসবুক বা ওয়েবসাইট ভিত্তিক ব্যবসায় করার ক্ষেত্রে আলাদা এফ-কমার্স বা ই-কমার্স নামক কোন ক্যাটাগরি নেই। তবে সেই ক্ষেত্রে আইটি সেক্টর দেখিয়ে আপনি ট্রেড লাইসেন্স করতে পারেন।

ট্রেড লাইসেন্স তৈরীর পর কোন তথ্য ভুল থাকলে তা ঠিক করবো কিভাবে?

নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে স্থানীয় অফিসে গিয়ে এফিডেবিটের মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্সের তথ্য পরিবর্তন / সংশোধন করা যায়।

একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে পুরো দেশে ব্যবসা করা যাবে কি

একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে আপনি সারা দেশেই আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারবেন বা সাপ্লাই দিতে পারবেন। তবে আপনার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান যে এলাকায় রয়েছে অর্থাৎ আপনার অফিস যে জায়গায় রয়েছে আপনাকে সেই অফিস এর আওতাধীন এলাকা থেকে আপনার ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।

ট্রেড লাইসেন্স কত দিনে পাওয়া যাবে?

আবেদন ফর্ম জমা দেয়ার দিন থেকে পাঁচ অথবা সাত কর্মদিবস এর মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যাবে।


একটি ট্রেড লাইসেন্স কি একাধিক ব্যবসায় ব্যবহার করা যায়?

না একটি ট্রেড লাইসেন্স শুধু মাত্র একটি ব্যবসার জন্যই প্রযোজ্য অর্থাৎ যে ব্যবসা পরিচালনার জন্য ট্রেড লাইসেন্সটি করা হয় শুধু মাত্র সেই ব্যবসা পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা যাবে অন্য কোন ধরনের ব্যবসার জন্য ব্যবহার করা যাবে না। নতুন কোন ব্যবসা শুরু করলে তার জন্য নতুন ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।

ফেসবুকে পেইজ খুলে ব্যবসায় করছি এর জন্য কোন ক্যাটাগরিতে ট্রেড লাইসেন্স করব?

অনলাইন মাধ্যম যেমন ফেসবুক বা ওয়েবসাইট ভিত্তিক ব্যবসায় করার ক্ষেত্রে আলাদা এফ-কমার্স বা ই-কমার্স নামক কোন ক্যাটাগরি নেই। তবে সেই ক্ষেত্রে আইটি সেক্টর দেখিয়ে আপনি ট্রেড লাইসেন্স করতে পারেন।

ট্রেড লাইসেন্স কি প্রতি বছরই রিনিও করা লাগবে? যদি আমি ব্যবসায় বন্ধ রাখি তাও?

জি হ্যাঁ, আপনাকে প্রতি বছর ট্রেড লাইসেন্স রিনিউ করা লাগবে। আপনি আপনার ব্যবসা বন্ধ করার পর, ট্রেড লাইসেন্স যদি সাসপেন্ড না করেন তাহলে আপনাকে প্রতি বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। যদি না করে থাকেন, তাহলে প্রতি মাসে ১০% হারে জরিমানা উক্ত ট্রেড লাইসেন্সের সাথে যুক্ত হবে।

ব্যবসার মালিকানা পরিবর্তন হলে কি নতুন করে ট্রেড লাইসেন্স করা লাগবে?

ব্যবসার মালিকানা পরিবর্তন হলে, ট্রেড লাইসেন্স সংশোধন করে তথ্য হালনাগাদ করতে হবে, নতুন ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে না।    

এসএমই ভাই এর মাধ্যমে আপনার ব্যবস্যার ট্রেড লাইসেন্স করিয়ে নিতেঃ

কিভাবে-ব্যাংক-লোন-এর-জন্য-এপ্লাই-করবেন

“ব্যাংক লোন নিতে চাই” কিভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করব?

ব্যবসার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে লাভ। যথাযথ লাভের জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ। এই সিদ্ধান্তের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে নতুন বিনিয়োগ, যা ব্যবসা বাড়াতে সহায়তা করে। কিন্তু উদ্যোক্তার পক্ষে চাইলেই নতুন বিনিয়োগের অর্থ যোগাড় করা কষ্টকর হয়ে যায়। এর একটি সহজ সমাধান হতে পারে ব্যাংক লোন। কিন্তু বেশিরভাগ উদ্যোক্তারই ব্যাংক লোনের প্রতি এক ধরণের ভীতি কিংবা অনীহা কাজ করে। এর কারণ খুঁজতে এবং উদ্যোক্তার সকল জিজ্ঞাসার সমাধান দিতে ব্যাংক লোনই হচ্ছে আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু।

কেন ব্যাংক লোন | When we should take bank loan?

নানা কারণে একজন উদ্যোক্তার ব্যাংক লোনের প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় ব্যবসায় এমন এক সময় চলে আসে যখন চাইলেও কারো একার পক্ষে যথেষ্ট লাভ করা সম্ভব হয় না যা দিয়ে আগের চাইতে বড় আকারে ব্যবসা করা যায়। স্বাভাবিক ভাবে তখন দরকার হয় নতুন বিনিয়োগের। কিন্তু চাইলেই একজন বিনিয়োগকারী খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। তখন উদ্যোক্তার ভরসা হয়ে দাঁড়ায় ব্যাংক লোন।

আবার এমনও হতে পারে যে কোন উদ্যোক্তা নতুন কোন প্রোজেক্ট শুরু করতে চান। কিন্তু তার পূর্বের ব্যবসা থেকে যে লাভ হয় তা দ্বারা নতুন কোন প্রজেক্টে বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়। তখন তার বিকল্প কোন পন্থা খুঁজে বের করতে হয়। তখন ব্যাংক লোনই হতে পারে একটি সমাধান।

অনেক সময় দেখা যায় ব্যবসায়ের পরিচালন ব্যয় এবং ফিক্সড কষ্ট বেশি হওয়ায় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিক্রয় না করতে পারলে আসলে লাভ করাই যাবে না। ওই নির্দিষ্ট পরিমাণ বিক্রয় করতে গেলে উৎপাদন বাড়াতে হবে আবার সাথে বিক্রয় খরচ ও বাড়াতে হবে, এমন পরিস্থিতে ব্যাঙ্ক লোন নেওয়া হয় ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল ফাইনাঞ্চিং করার জন্য। একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে।

ধরা যাক কোন উদ্যোক্তা মাছ চাষ করতে ইচ্ছুক। মাছ চাষের আগে তার পুকুর প্রস্তুত করতে হবে। এর জন্য যা কিছু লাগবে তা ফিক্সড কষ্টের অন্তর্ভুক্ত। ধরা যাক পুকুর প্রস্তুত করতে তার ৩ লাখ টাকা লাগলো। এখন পুকুরের ধারণ ক্ষমতা ৫ টন হয়, এবং ওই ব্যক্তি যদি ২ টন মাছ চাষ করে, তাও তার ওই ৩ লাখ টাকার পুরোটাই খরচ হবে। এই তিন লাখ টাকা হচ্ছে তার ফিক্সড কষ্ট। এখন সরাসরি প্রতি টন মাছ চাষ করতে ৫০ হাজার টাকা করে লাগলে ২ টন মাছ চাষে তার খরচ হবে ১ লাখ টাকা। এই ১ লাখ টাকা হচ্ছে তার ভ্যারিয়েবল কষ্ট। তাহলে ওই উদ্যোক্তার মোট খরচ হয় ৪ লাখ টাকা। তাহলে প্রতি টন মাছে তার মোট খরচ হয় ২ লাখ টাকা। প্রতি টন মাছ তাকে বিক্রি করতে হবে কমপক্ষে ২ লাখের বেশি টাকায়।

এখন যদি সে ৫ টন মাছ চাষ করে, তাহলে শুধু মাছ চাষে তার খরচ হয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। অর্থাৎ ভ্যারিয়েবল কস্ট ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ফিক্সড কষ্ট ৩ লাখ টাকাই থাকবে। তাহলে মোট খরচ ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতি টন মাছ চাষে এখন মোট খরচ হচ্ছে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা, যেখানে আগে হত ২ লাখ টাকা। প্রতি টনে সাশ্রয় হচ্ছে ৯০ হাজার টাকা। অর্থাৎ শুরুতে বেশি খরচ হলেও সব মিলিয়ে উদ্যোক্তার লাভের পরিমাণ বেশি হবে যদি সে উৎপাদন বেশি করে। কিন্তু তার জন্য শুরুতে ওই উদ্যোক্তার ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা অতিরিক্ত দরকার, যা তার পক্ষে যোগাড় করা সম্ভব নাও হতে পারে। এর সহজ সমাধান হতে পারে ব্যাংক লোন।

ব্যাংক লোন সম্পর্কে বেশির ভাগ মানুষের এক ধরণের নেতিবাচক ধারণা কাজ করে। সবার মনে এক চিন্তা থাকে যে লোন নিয়ে কোন ঝামেলায় পড়তে হয় কিনা। এর প্রধান কারণ মানুষের ব্যাংক লোন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণার অভাব। অনেকেই মনে করে ব্যাংক লোন নেয়া খুবই ঝামেলার ব্যাপার এবং এর জন্য প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হয়। কিন্তু আসলে তা নয়। ব্যাংক লোনের জন্য সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে সহজেই ব্যাংক লোন পাওয়া সম্ভব।

অনেকের মনে আরো ভাবনা থাকে যে ব্যাংক লোন নিয়ে তা পরিশোধ করা খুবই কষ্টকর। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট হারে ইন্টারেস্ট চার্জ করে যা সহজেই মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করা সম্ভব। এর জন্য কেবল দরকার সঠিক সময়ে প্রতি মাসে কিস্তির টাকা জমা দেয়া।

ব্যাংক লোন তাদের জন্য নয় যারা ঋণখেলাপি, অর্থাৎ যাদের উদ্দেশ্যই থাকে ঋণকৃত অর্থ ফেরত না দেয়া। এ রকম অনেকেই আছে যারা ব্যাংক থেকে এক কথা বলে লোন নেয়, কিন্তু বাস্তবে করে ভিন্ন কিছু। এমনও দেখা যায় যে খামার করার কথা বলে লোন নিয়ে তা খরচ করা হয়েছে মেয়ের বিয়ের যৌতুক দিতে। যদি সঠিক ব্যবহার না করা হয়, তাহলে কিভাবে লোন সঠিক সময়ে পরিশোধ করা সম্ভব হবে?

উদ্যোক্তার সততা এবং তার পরিশ্রম ব্যবসায় যে লাভ এনে দেয়, তা দ্বারা সহজেই তিনি লোন পরিশোধ করতে সক্ষম হবেন। পূর্বের উদাহরণ থেকে দেখা যায়, যদি উদ্যোক্তা ব্যাংক লোন নিয়ে তার সঠিক ব্যবহার করেন, তাহলে তার ব্যবসায় আগের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি লাভ করা সম্ভব। উক্ত উদাহরণে উল্লেখিত উদ্যোক্তার প্রতি টনে ৯০ হাজার টাকা সাশ্রয় হয়। তাহলে তিনি যদি আগের দামে মাছ বিক্রি করেন, তাহলে তার প্রতি কেজিতে ৯০ টাকা অতিরিক্ত লাভ হয়, যা দ্বারা সহজেই তার পক্ষে লোন পরিশোধ করা সম্ভব।

ব্যাংক লোন নিতে অসুবিধার কারণ (Major Challenges for Applying for Bank Loan)

যে সকল কারণে সাধারণত ব্যাংক লোন এর জন্য আবেদন করা যায় না সেগুলো হচ্ছে ব্যবসার কোন নিবন্ধন না থাকা, অর্থাৎ রেজিস্ট্রেশন না থাকা। অনেক উদ্যোক্তাই শুরুতে ব্যবসা রেজিস্ট্রেশন করে না। পরবর্তীতে যখন লোনের জন্য আবেদন করা হয়, তখন দেখা যায় যে ওই ব্যবসা নিবন্ধিত না। অনিবন্ধিত কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি ব্যাংক লোনের জন্য আবেদনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়। দ্বিতীয় সঠিক ফিন্যান্সিয়াল ডকুমেন্ট না থাকা। লোনের জন্য কমপক্ষে তিন বছরের সকল আর্থিক লেনদেনের রেকর্ড থাকতে হয়।

ব্যাংক লোন নিতে যা যা প্রয়োজন (Eligibility Criteria for Bank Loan)

ব্যবসা নিবন্ধিত কিনাঃ

ব্যাংক লোন নেয়ার জন্য সর্ব প্রথম দরকার ট্রেড লাইসেন্স। ট্রেড লাইসেন্স ব্যতীত কোন উদ্যোক্তা লোন গ্রহণ করতে পারবেন না। ট্রেড লাইসেন্সে উদ্যোক্তার নাম, ঠিকানা উল্লেখিত থাকে যেটা ব্যাংক তার প্রাথমিক পরিচয় হিসেবে গ্রহণ করে। কাউকে ধার দেয়ার আগে আমরা যে রকম তার সম্পর্কে খোঁজ নেই, সে ভাবে ব্যাংক ঋণ প্রদানের আগে উদ্যোক্তার সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়ার মাধ্যম হিসেবে ট্রেড লাইসেন্স ব্যবহার করে। তাই সর্ব প্রথম ব্যবসা নিবন্ধন করা প্রয়োজন। ট্রেড লাইসেন্স শুধু থাকলেই হবে না প্রতি বছর নবায়ন ও করতে হবে।    
আপনার ব্যবস্যার ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত যেকোন জিজ্ঞাসায় সঠিক পরামর্শ এবং নির্দেশনা পাবেন এসএমই ভাই থেকে।

ঠিকানা যাচাইঃ

পরবর্তীতে ব্যাংক যা করে তা হচ্ছে ব্যবসার ঠিকানা ভেরিফিকেশন, অর্থাৎ আসলেই ওই ব্যবসার কোন ফিজিক্যাল আইডেন্টিটি আছে কিনা তা দেখে। এর জন্য ব্যাংক কোন ব্যবসার রেন্টাল ডিল, অর্থাৎ উদ্যোক্তা ও তার ভাড়াকৃত ভবনের মালিকের মধ্যে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, তা দেখতে চায়। এটা শুধু মাত্র ভাড়াকৃত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য। কেউ যদি নিজের বা পারিবারিক সম্পত্তি ব্যবসার জন্য ব্যবহার করে তাহলে তার দলিল ব্যাংক লোন নেয়ার আগে প্রমাণ হিসেবে দেখাতে হয়।

সঠিক ফিন্যান্সিয়াল ডকুমেন্ট আছে কিনাঃ

ব্যবসার ইনকাম স্টেটমেন্ট ব্যাংক লোনের জন্য একটি অন্যতম প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট। ইনকাম স্টেটমেন্ট হতে ব্যবসার আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে ব্যাংক ধারণা পায়। স্বাভাবিক ভাবেই একটি লাভজনক ব্যবসাকে লোন দিতে যে কোন ব্যাংকের বেশি আগ্রহ থাকে। তেমনি কোন ব্যবসায় যদি সব সময় লস হতে থাকে তাহলে তার ব্যাংক লোন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। সাধারণত ৫ লাখ টাকার অধিক লোনের জন্য TIN, অর্থাৎ ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর প্রয়োজন। এছাড়াও BIN বা বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর, যা ভ্যাট প্রদানের জন্য দরকার, তাও প্রয়োজনে ব্যাংক চাইতে পারে।

কমপক্ষে তিন বছরের লেনদেনের রেকর্ড আছে কিনাঃ

ব্যাংক লোনের পূর্বে ব্যাংক কোন উদ্যোক্তার ব্যাংক ট্রানজেকশনের রেকর্ড দেখতে চায়। কোন উদ্যোক্তা কার সাথে লেনদেন করছে, কি পরিমাণ লেনদেন করছে, কি কারণে লেনদেন করছে ইত্যাদি ব্যাংক লোন পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে।

গ্যারান্টরঃ

গ্যারান্টর হচ্ছে এমন একজন ব্যক্তি যে ব্যাংককে নিশ্চয়তা দেবে যে লোন গ্রহণকারী ব্যক্তি সঠিক সময়ে তা ফেরত দেবে। কোন ব্যক্তির গ্যারান্টর যদি এমন কেউ হয় যার ঐ ব্যাংকের সাথে সুসম্পর্ক রয়েছে, কিংবা যার ঐ ব্যাংকের মাধ্যমে প্রচুর লেনদেন করা হয়, তাহলে তার লোন পেতে সুবিধা হয়। কিন্তু গ্যারান্টরের কিছু ঝুঁকি থাকে। কোন কারণে লোন গ্রহণকারী তা ফেরত দিতে না পারলে গ্যারান্টর আইনত সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে। তাই কেবল তাদের জন্য গ্যারান্টর হওয়া উচিত যারা পরিচিত ও বিশ্বাসযোগ্য।

উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো ছাড়াও মর্টগেজ, অর্থাৎ জমি, বাড়ি ইত্যাদি সম্পত্তি বন্ধক রেখে, কিংবা লোনকৃত টাকার কমপক্ষে ১০% ফিক্স ডিপোজিট রেখেও লোন নেয়া যায়। এছাড়া আগে লোন নিয়ে তা যথাযথ সময়ে পরিশোধ করলে পরবর্তীতে লোন পেতে সুবিধা হয়।

How to prepare & apply for bank loan?


ব্যাংক লোনের জন্য ব্যবসার শুরু থেকেই একজন উদ্যোক্তার প্রস্তুতি নিতে হবে। ব্যবসার সকল লেনদেনের সঠিক হিসাব রাখতে হবে। আয় ও ব্যয়ের সকল হিসাব রাখা প্রয়োজন, যার জন্য সঠিক একাউন্টিং জানা দরকার। সঠিক ফিন্যান্সিয়াল রেকর্ড রাখা প্রয়োজন, যা দ্বারা ব্যবসার সঠিক চিত্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এ সব কিছুই উদ্যোক্তার হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে উদ্যোক্তাদের পাশে আছে SME VaiSME Hishab সফটওয়্যার দ্বারা একজন উদ্যোক্তা সহজেই তার সকল ফিন্যান্সিয়াল ডকুমেন্টের রেকর্ড রাখতে সক্ষম হবেন বিনা খরচে।

Read more blogs

আপনার-ব্যবসা-কতখানি-লাভজনক

আপনার ব্যবসা কতখানি লাভজনক?

“লাভ” ব্যবসার সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত একটি শব্দ। যে কোন ব্যবসারই প্রধান উদ্দেশ্য হল লাভ। লাভ করার জন্যই সবাই ব্যবসায় করে। জেনেশুনে কেউ আসলে ব্যবসায় লস করতে চায় না। কিন্তু আসলেই কি ব্যবসায় লাভ হচ্ছে? লাভ হলেও বা হচ্ছে কতটুকু? তাহলে দিন শেষে হিসাবের খেরো খাতায় কেন তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না? এ সব কিছুর উত্তর খুঁজতেই আজকের এই রচনার অবতারণা।

লাভ আসলে কি?

এক কথায় বলতে গেলে লাভ হচ্ছে আয় আর ব্যয়ের পার্থক্য। অর্থাৎ আমরা যদি ১০ টাকা দিয়ে কোন জিনিস কিনে ২০ টাকায় বিক্রয় করি তবে ১০ টাকা আমাদের লাভ হবে। কিন্তু লাভের ধারণা এত সহজে প্রকাশযোগ্য নয়। লাভ আসলে কি বুঝতে গেলে এর প্রকারভেদ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। সঠিক ফিন্যান্সিয়াল স্টেটমেন্ট তৈরির জন্য এবং ফিন্যান্সিয়াল হেলথ মনিটর করতে লাভ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা আবশ্যক। ব্যবসায়ে আসলেই লাভ হচ্ছে কিনা বুজতে হলে আমাদের ভালো করে বুঝতে হবে গ্রস প্রফিট এবং নেট প্রফিট নামক এই ২ কন্সেপ্ট।   

গ্রস প্রফিট

আমরা ছোটবেলায় যে লাভ ক্ষতির অংক করতাম তাতে যে লাভ বা প্রফিট বের হত তাই হচ্ছে গ্রস প্রফিট। এখানে আনুষাঙ্গিক অন্যান্য বিষয়াবলীকে আমলে না নিয়ে বিক্রয়মূল্য হতে শুধু বিক্রয়কৃত পণ্যের উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে লাভ হিসাব করা হয়। ধরা যাক রহিমের একটি দোকান আছে। দোকানে বিক্রয়কৃত মোট পণ্যের মূল্য ১০০,০০০ টাকা। এই পণ্যের ক্রয় মূল্য হচ্ছে ৮০,০০০ টাকা। তাহলে তার লাভ হচ্ছে ২০,০০০ টাকা। এখানে যে লাভের কথা বলা হচ্ছে তা হচ্ছে গ্রস প্রফিট।

কোন ব্যবসার লাভের সম্ভাবনা ও আর্থিক অবস্থার অন্যতম সূচক হচ্ছে গ্রস প্রফিট। যখন উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়, তখন গ্রস প্রফিট কমে যায়। সে ক্ষেত্রে ব্যবসা পরিচালনার প্রয়োজনীয় অর্থের ঘাটতি দেখা দেয়। আবার উৎপাদন খরচ কমে গেলে গ্রস প্রফিট বেড়ে যায়। 

নেট প্রফিট

অনেক সময় দেখা যায় যে আপাত দৃষ্টিতে লাভ অনেক হয়েছে মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে লাভ ততটা হয়নি। এর কারণ হচ্ছে কোন ব্যবসায় কেবল মাত্র পণ্য উৎপাদনেই খরচ হয় না, এছাড়াও আরো নানাবিধ খরচ রয়েছে। এ সম্পর্কে ধারণা দিতে সাহায্য করে নেট প্রফিট। নেট প্রফিটকে অপর কথায় প্রকৃত লাভও বলা হয়। নেট প্রফিটের ক্ষেত্রে কেবল বিক্রয়মূল্য থেকে উৎপাদন খরচই বাদ দেয়া হয় না, এছাড়াও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক খরচ যেমন কর (ট্যাক্স), ব্যবসা পরিচালনার খরচ প্রভৃতি বাদ দেয়া হয়। এই সকল কিছু বাদ দেয়ার পর যে পরিমাণ অর্থ উদ্বৃত্ত থাকে তাই হচ্ছে নেট প্রফিট। এই ধারণটি আরও ভালোভাবে বুঝতে আমরা রহিমের গল্পে ফেরত যাই। ধরা যাক রহিমের দোকানের ভাড়া বাবদ মোট ৫,০০০ টাকা লাগে। তাছাড়াও মালামাল আনা-নেয়া করতে পরিবহন খরচ হয় আরো ২,০০০ টাকা। রহিমের দোকানে করিম সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করে এবং তার বেতন দিতে খরচ হয় মোট ৫০০০ টাকা। তাহলে মোট আনুষাঙ্গিক ব্যয় হয় অতিরিক্ত ১২,০০০ টাকা। রহিমের গ্রস প্রফিট ছিল ২০,০০০ টাকা। তাহলে রহিমের নেট প্রফিট হচ্ছে ৮,০০০ টাকা। আবার যদি তার দোকান ভাড়া ১০,০০০ টাকা, পরিবহন খরচ ৪,০০০ টাকা এবং কর্মচারীর বেতন ১০,০০০ টাকা হত, তাহলে আনুষাঙ্গিক ব্যয় হত ২৪,০০০ টাকা। তখন লাভের পরিবর্তে ক্ষতি বা লস হত। একে বলা হয় নেট লস। অর্থাৎ মোটা দাগে প্রতিমাসে ২০,০০০ টাকার লাভ করেও কিন্তু আসলে লস করতে পারে যদি আনুষঙ্গিক খরচ এই লাভের অঙ্ক থেকে বেড়ে যায়।   

নেট প্রফিটই আমাদের এটা বুঝতে সাহায্য করে যে কোন ব্যবসা আসলেই লাভজনক কিনা। কোন ব্যবসার প্রকৃত আর্থিক অবস্থা বুঝতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। পূর্ববর্তী লাভের সাথে বর্তমান লাভ বা ক্ষতির তুলনা করে ব্যবসার ফিন্যান্সিয়াল হেলথ সম্পর্কে নেট প্রফিট আমাদের ধারণা দেয়। নেট প্রফিট থেকেই আমরা বুঝতে পারি ব্যবসা সম্প্রসারণের সঠিক সময় কখন। ব্যবসা সম্প্রসারণ করা গেলেও কতটুকু বিনিয়োগ করা সম্ভব তাও বুঝা যায় নেট প্রফিট থেকে। আবার যদি নেট লস হয়, তাহলে কতটুকু উৎপাদন কমাতে হবে কিংবা কোন কোন ক্ষেত্রে খরচ কমালে লাভ হবে তাও নেট প্রফিট হিসাবের সময় তা থেকে জানা যায়।

কোন উদ্যোক্তার জন্য লাভ এবং লাভের সম্ভাবনার পার্থক্য জানা জরুরী। লাভ হচ্ছে একটি বাস্তব সংখ্যা মাত্র যা আয় ও ব্যয়ের পার্থক্য নির্দেশ করে। অপর দিকে লাভের সম্ভাবনা বা প্রফিটাবিলিটি হচ্ছে একটি আপেক্ষিক সংখ্যা যা লাভকে ব্যবসার আয়ের শতকরা অনুপাত হিসাবে প্রকাশ করে। নেট প্রফিট দ্বারা লাভের সম্ভাবনা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়, যার উপর ব্যবসার সফলতা নির্ভরশীল। কোন উদ্যোক্তা যখন ঋণের জন্য আবেদন করে, কিংবা নতুন বিনিয়োগকারী খোঁজে, তখন সর্ব প্রথম তার নেট প্রফিট কত কিংবা তার ব্যবসার লাভের সম্ভাবনা কত তা দেখা হয়। এর উপর ভিত্তি করে ঋণ প্রদানের কিংবা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

নেট প্রফিট গ্রস প্রফিটের পার্থক্য জানার প্রয়োজনীয়তা

নেট প্রফিট দ্বারা ব্যবসার প্রকৃত অর্থনৈতিক অবস্থা এবং উদ্যোক্তার হাতে থাকা উদ্বৃত্ত অর্থ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় যা গ্রস প্রফিট হতে পাওয়া যায় না। যখন কোন বিনিয়োগকারী বিনিয়োগে আগ্রহী হয়, তখন তারা ঐ প্রতিষ্ঠানের নেট প্রফিট সম্পর্কে ধারণা চায় যাতে তারা বুঝতে পারে তাদের বিনিয়োগ ফলপ্রসূ হবে কিনা। বিনিয়োগকৃত অর্থের উপর নির্দিষ্ট পরিমাণ লাভ না হলে অনেক বিনিয়োগকারী বিনিয়োগে আগ্রহী হয় না।

অপর দিকে, গ্রস প্রফিট উৎপাদন খরচ কমাতে কিংবা পণ্যের মূল্য নির্ণয়ে সাহায্য করে। যদি নেট প্রফিট গ্রস প্রফিটের চেয়ে খুবই কম হয় তাহলে আনুষাঙ্গিক খরচ কমানোর দিকে মনোযোগী হতে হবে।

তাই সঠিক ইনকাম স্টেটমেন্ট তৈরির জন্য গ্রস প্রফিট ও নেট প্রফিটের সঠিক ধারণা থাকা আবশ্যক। এই দুটির সঠিক ধারণা না থাকলে ফিন্যান্সিয়াল ডকুমেন্ট তৈরিতে অসুবিধা সৃষ্টি হবে কিংবা ভুল তথ্য ইনপুট হবে। ফলে ব্যবসার প্রকৃত চিত্র সঠিক ভাবে পরিলক্ষিত হবে না, যা নতুন বিনিয়োগ কিংবা ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারে।

গ্রস প্রফিট নেট প্রফিট নির্ণয়

উপরের আলোচনা থেকে আমরা গ্রস প্রফিট ও নেট প্রফিট সম্পর্কে কিছুটা ধারণা লাভ করতে সক্ষম হয়েছি। আবার আসুন কিছু ফর্মুলা শিখে ফেলি যেন নিজ নিজ ব্যবসায়ের প্রফিট নির্ণয় সঠিক ভাবে করতে পারিঃ

গ্রস প্রফিট = বিক্রয় মূল্য – পণ্য উৎপাদন খরচ (ক্রয় মূল্য)

একটি সফল ব্যবসায়ের গ্রস প্রফিট সব সময় ধনাত্মক হয়। তার মানে উৎপাদিত পণ্যের খরচ কিংবা পণ্যের ক্রয় মূল্য সব সময় বিক্রয় মূল্যের চেয়ে কম হতে হয়।

নেট প্রফিট (নেট লস) = গ্রস প্রফিট – আনুষাঙ্গিক ব্যয়

আনুষাঙ্গিক ব্যয়ের মধ্যে পরিচালনা খরচ, বিজ্ঞাপন খরচ, অবচয়, কর ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। প্রথমে ব্যবসা পরিচালনার খরচ নির্ণয় করতে হয়। পরবর্তীতে এর সাথে কর, ঋণের ইন্টারেস্ট ইত্যাদি যোগ করে আনুষাঙ্গিক ব্যয় পাওয়া যায়। উক্ত সংখাকে গ্রস প্রফিট থেকে বাদ দিলে নেট প্রফিট পাওয়া যায়। গ্রস প্রফিটের চেয়ে আনুষাঙ্গিক ব্যয় বেশি হলে নেট লস হয়। সাধারণত নতুন ব্যবসার ক্ষেত্রে নেট লস হয় কারণ শুরুতে ব্যবসা থেকে যথেষ্ট আয় হয় না যা দিয়ে সকল খরচ মিটিয়ে লাভ করা যায়। তখন শুরুতে বিনিয়োগকৃত মূলধন থেকে সাপোর্ট নিয়ে ব্যবসায় চালাতে হয়। পরবর্তীতে ২ উপায়ে নেট প্রফিট বাড়ানোর চেষ্টা করা যেতে পারেঃ উৎপাদন খরচ কমিয়ে এনে গ্রস প্রফিট বাড়িয়ে এবং উৎপাদন ও ব্যবসা পরিচালনায় কোনরূপ বাঁধা সৃষ্টি না করে আনুষাঙ্গিক খরচ কমানোর মাধ্যমে।  

যথাযথ ভাবে গ্রস প্রফিট ও নেট প্রফিট নির্ণয় সঠিক ইনকাম স্টেটমেন্ট তৈরিতে ভূমিকা রাখে। ইনকাম স্টেটমেন্ট হচ্ছে একটি উদ্যোগের অর্থনৈতিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি। এর উপর নির্ভর করে সেই উদ্যোগের নতুন বিনিয়োগ ও ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা।

ব্যবসা লাভজনক কিনা জানতে সঠিক একাউন্টিংয়ের প্রয়োজনীয়তা

তাই কোন ব্যবসা লাভজনক কিনা তা বুঝতে হলে কেবল মাত্র গ্রস প্রফিটের প্রতি নির্ভরশীল হলে চলবে না, বরং প্রকৃত আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পেতে চাইলে নেট লাভ তথা প্রকৃত লাভ নির্ণয় করতে হবে। এর উপরেই ব্যবসার সফলতা বহুলাংশে নির্ভর করে। সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে যথাযথ লাভের ধারণা সহায়তা করে, যা একটি ব্যবসা পরিচালনার অবিচ্ছেদ্য ও অপরিহার্য অংশ। তাই একজন সফল উদ্যোক্তার জন্য সঠিক ভাবে লাভ নির্ণয় করতে পারার কোন বিকল্প নেই। এর জন্য দরকার সঠিক হিসাব রাখার দক্ষতা।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় একজন উদ্যোক্তার পক্ষে তার ব্যবসার সকল লেনলেনের হিসাব রাখা সম্ভব হয়ে উঠে না। কিংবা লেনদেনের হিসাব রাখতে পারলেও গ্রস প্রফিট এবং নেট প্রফিট সম্পর্কে যথযথ ধারণা না থাকায় সঠিক ভাবে ইনকাম স্টেটমেন্ট তৈরি করা কষ্টকর হয়ে যায়। ফলে তখন তার একজন দক্ষ একাউন্ট্যান্ট নিয়োগ দিতে হয় যে তার ব্যবসার সঠিক ইনকাম স্টেটমেন্ট তৈরিতে সাহায্য করে তার ব্যবসার প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ে সাহায্য করে। ফলে উদ্যোক্তার পক্ষে তার ব্যবসা আসলে কতটুকু লাভজনক সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া এবং কিভাবে ব্যবসা আরো লাভজনক করা যায় সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া বহুলাংশে সহজ হয়ে যায়। তাই সকল ব্যবসায় একজন দক্ষ একাউন্ট্যান্টের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

কিন্তু একজন দক্ষ একাউন্ট্যান্ট পাওয়া একটি নতুন উদ্যোগের জন্য যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যয়বহুল। একজন ফুল টাইম একাউন্ট্যান্টের জন্য কমপক্ষে মাসিক ৩০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা ব্যয় করতে হয়, যা নতুন উদ্যোক্তার জন্য বাহুল্য হয়ে দাঁড়ায়। তাই উদ্যোক্তাদের এমন সমাধান দরকার যা তাকে স্বল্প মূল্যে তার লেনদেন ও আয় এবং ব্যয়ের হিসাব রাখতে সাহায্য করবে এবং পরবর্তীতে তার ইনকাম স্টেটমেন্ট ও লাভ ক্ষতির সঠিক হিসাব দিবে।  

এ ব্যাপারে একজন উদ্যোক্তার সহায়ক হয়ে পাশে আছে SME VAI এর SME Hishab সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যারের সাহায্যে একজন উদ্যোক্তা খুবই কম খরচে তার ব্যবসার লেনদেনের সঠিক হিসাব রাখতে সক্ষম হবেন। তার সেলস, ক্যাশ ট্রানজেকশন, ইনভেনটরি কাউন্ট; সব কিছু হবে রিয়াল টাইমে।