fbpx

কিভাবে একটি লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে হয়? কোম্পানি নিবন্ধন করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া । How to register a Private Limited Company In Bangladesh

কিভাবে একটি লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে হয়

কিভাবে একটি লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে হয়? কোম্পানি নিবন্ধন করার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া । How to register a Private Limited Company In Bangladesh

Facebook
LinkedIn
Pinterest
Twitter

Table of Contents

কিভাবে একটি লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে হয়?

একটি লিমিটেড কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন এখন মোটেও আর কঠিন কোন কাজ নয়। নূন্যতম ২ জন এবং অনধিক ৫০ জন মিলে একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি গঠন করতে পারেন। তবে সম্প্রতি কোম্পানি আইনের সংশোধনিতে One Person Company (OPC) বা শুধু মাত্র একজন ব্যক্তির দ্বারা একটি কোম্পানী খোলার বিধান রাখা হয়েছে। বাংলাদেশে কোম্পানী গঠন করার ক্ষেত্রে আমাদের ১৯৯৪ সালের কোম্পানি আইন অনুসরণ করে কিছু নিয়ম মেনে আবেদন করতে হয়। আবেদন করার প্রেক্ষিতে Rejistrar of Joint Stock (RJSC) তথ্য যাচাই বাঁচাই করে কোম্পানির নিবন্ধন দিয়ে থাকে।

আসুন দেখে নেই কিভাবে ধাপে ধাপে একটি লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধন এর জন্য আবেদন করতে হয়।

প্রথম ধাপঃ নেইম ক্লিয়ারেন্স

একটা কোম্পানি নিবন্ধনের প্রথম ধাপ হল আপনি যেই নামে কোম্পানিটি নিবন্ধন করতে চাচ্ছেন সেই নাম টি এভেইলেবল আছে কি না, তা চেক করা, যদি আপনার কাঙ্খিত নামটি এভেইলেভেল থাকে তাহলে নেম ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করা।

আপনার কোম্পানির নামটি হতে হবে ইউনিক, অর্থ্যাৎ এই নামে বাংলাদেশে অন্য কোন রেজিস্টার্ড কোম্পানি থাকতে পারবে না। 

আপনি খুব সহজে আরজেএসসির ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে পারেন আপনার পছন্দকৃত নামটি এভেইলেভেল আছে কি না, এবং ফ্রী থাকলে আপনি নেম ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। নামের ছাড়পত্রের জন্য নির্ধারিত ফি ( ২০০ টাকা + ভ্যাট) সরকার নির্ধারিত ব্যাংক এ জমা দিতে হয়। নেম ক্লিয়ারেন্সের আবেদন ও নির্ধারিত ফি পাওয়ার পর ইতোমধ্যে নিবন্ধিত, ছাড়পত্রপ্রাপ্ত বা আবেদনকৃত কোন নামের সাথে মিলে না যায় বা অনুরূপ না হয় এমন শর্ত বিবেচনায় প্রস্তাবিত নামসমূহের মধ্য থেকে যেকোনো একটি নামের জন্য ছাড়পত্র প্রদান করে। ছাড়পত্র পাওয়ার পর তা ৩০ দিন পর্যন্ত বহাল থাকে, তাই ৩০ দিনের মধ্যে কোম্পানি নিবন্ধনের যাবতীয় ফরমালিটিস সম্পন্ন করতে হবে অন্যথায় পুনরায় নামের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপঃ কোম্পানির গঠনতন্ত্র ঠিক করা।

এ পর্যায়ে কোম্পানি গঠন ও পরিচালনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ২টি দলিল মেমোরান্ডাম অফ এসোসিয়েশন (MoA) এবং আর্টিকেল অফ এসোসিয়েশন (AOA) তৈরি করতে হবে। এই দলিলেই কোম্পানির শেয়ারের পরিমাণ, অথরাইজ ক্যাপিটাল, পেইড আপ ক্যাপিটাল সহ সব বিষয় উল্লেখ থাকে।

মেমোরান্ডাম অফ এসোসিয়েশন (MoA)

মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন হলো একটি কোম্পানির প্রাণ বা সংবিধান। সাধারণত কোম্পানির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, কোম্পানির নাম, অফিসের ঠিকানা ইত্যাদি বিষয়গুলো কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশনে লিপিবদ্ধ থাকে। পরবর্তীতে মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন এ কোন পরিবর্তন আনতে চাইলে আদালতের অনুমতি নিতে হয়।

আর্টিকেল অফ এসোসিয়েশন (AOA)

অপরদিকে কোম্পানি পরিচালিত হয়ে থাকে আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন এর মাধ্যমে। কোম্পানি কিভাবে কখন থেকে শুরু হবে, কোম্পানির মুলধন কত হবে, শেয়ার কিভাবে হস্তান্তর করা যাবে, ঋণ কিভাবে নেয়া হবে, চেয়ারম্যান, ম্যানেজার, পরিচালকদের ক্ষমতা ও কার্যাবলী, কোম্পানীর সিল, বাৎসরিক সভা, হিসাব, কোম্পানির অবসায়ন সহ যাবতীয় বিষয়াবলী লিপিবদ্ধ থাকে কোম্পানির আর্টিকেল অব এসোসিয়েশনে।

তৃতীয় ধাপঃ আরজেএসসি এর রেজিস্ট্রিকরণ: 

সবকিছু প্রস্তুত করেই আরজেএসসির ওয়েবসাইট থেকে কোম্পানির নিবন্ধনের আবেদনপত্র ডাউনলোড করতে হবে এবং ওই আবেদনপত্র যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। সঙ্গে MoA ও AoA এর মূল কপি ও অতিরিক্ত দুই কপি, নামের ছাড়পত্রের সনদ, পরিচালকদের তালিকা, পরিচালকের সম্মতিপত্র ইত্যাদি দিতে হবে। সবকিছু সফল ভাবে আপলোড এবং সাবমিট করা হলে, নিবন্ধন ফি সহ অন্যান্ন সরকারী ফিস জমা দেওয়ার জন্য ব্যাংকের পেমেন্ট স্লিপ ডাউনলোড করার অপশন আসবে। স্লিপটি প্রিন্ট করে নির্ধারিত ব্যাংকে ফিস জমা দিতে হবে।

কোম্পানি গঠন করার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এবং তথ্য 

  • পরিচালকদের বিবরন যেমন নাম, পিতা -মাতার নাম, পাসপোর্ট নম্বর, ইমেল আইডি, মোবাইল নম্বর।
  • ম্যানেজিং ডিরেক্টর এর নাম
  • চেয়ারম্যানের নাম
  • সকল শেয়ার হোল্ডার এবং পরিচালকগণের এনআইডি (জাতীয় পরিচয় পত্র), টি.আই. এন (TIN) এবং ছবি (১ কপি)
  • কোম্পানির ঠিকানা

কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন ফী:

কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন ফী কত এটি নির্ভর করে কোম্পানির অনুমোদিত মূলধনের উপর। উদাহরণস্বরূপ, অনুমোদিত মূলধন যদি ১০ লক্ষ হয় তবে সরকারী ফি হবে ১৫,০৮৩ টাকা। আরেজএসসির ফী ক্যালকুলেটর থেকে আপনি নিজেই হিসাব করে বের করতে পারবেন আপনার কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন ফী কত হবে।

চতুর্থ ধাপঃ সার্টিফিকেট অফ ইন–কর্পোরেশন:

উল্লিখিত সমস্ত তথ্য এবং ব্যাংক এনক্যাশমেন্ট সার্টিফিকেট পাওয়ার পরে, আরজেএসসি মেমোরেন্ডাম অব এসোসিয়েশন ও আর্টিকেল অব এসোসিয়েশন এর কপি সহ সমস্ত তথ্য যাচাই বাছাই করবে। সমস্ত তথ্যে সন্তুষ্ট হওয়ার পরে আরজেএসসি কোম্পানির নামে ইন-কর্পোরেশন সার্টিফিকেট (Certificate of Incorporation) ইস্যু করবে। এরপর সার্টিফিকেট অব ইনকরপোরেশন, সংঘ স্মারক ও সংঘ বিধি এবং ফরম ১২ ই-মেইলে পাঠিয়ে দেবে। এগুলো পেয়ে যাওয়া মানেই কোম্পানিটি নিবন্ধিত হয়েছে।

কোম্পানি নিবন্ধিত হওয়ার পরে ব্যবসা কার্যক্রম শুরু করার জন্য আপনাকে আরও কিছু লাইসেন্স/ সনদ সংগ্রহ করতে হবে। ব্যবসায়ের ধরণ ও প্রকৃতি অনুসারে এই সনদের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। কোম্পানি নিবন্ধনের পরে বাধ্যতামূলক যে সনদসমূহ নিতে হবে:

   ১। ট্রেড লাইসেন্স

    ২। কোম্পানীর নামে টিন সার্টিফিকেট

    ৩। ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি

সবকিছু রেডি হয়ে গেলে আপনি ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করতে পারেন।

কোম্পানি নিবন্ধন নিয়ে আরও কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর।

লিমিটেড কোম্পানি করতে কি কি লাগে?

একটি লিমিটেড কোম্পানি গঠন করার জন্য যে সকল কাগজ পত্রাদি, নথি এবং তথ্য প্রয়োজন তা নিম্নরূপ:
১. পরিচালকদের বিবরন যেমন নাম, পিতা -মাতার নাম, ইমেল আইডি, মোবাইল নম্বর।
২. ম্যানেজিং ডিরেক্টর এর নাম
৩. চেয়ারম্যানের নাম
৪. সকল শেয়ার হোল্ডার এবং পরিচালকগণের এনআইডি (জাতীয় পরিচয় পত্র), টি.আই. এন (TIN) এবং ছবি (১ কপি)
৫. কোম্পানির ঠিকানা
৬. মেমোরান্ডাম অফ এসোসিয়েশন (MoA) এবং আর্টিকেল অফ এসোসিয়েশন (AOA)

লিমিটেড কোম্পানি করার খরচ কত?

কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন ফী কত এটি নির্ভর করে কোম্পানির অনুমোদিত মূলধনের উপর। উদাহরণস্বরূপ, অনুমোদিত মূলধন যদি ১০ লক্ষ হয় তবে সরকারী ফি হবে ১৫,০৮৩ টাকা। আরেজএসসির ফী ক্যালকুলেটর থেকে আপনি নিজেই হিসাব করে বের করতে পারবেন আপনার কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন ফী কত হবে।

পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডার এর মধ্যে পার্থক্য কি?

শেয়ারহোল্ডার কোম্পানির মালিক, অন্যদিকে পরিচালক কোম্পানি পরিচালনা করে থাকনে। কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার কোম্পানির পরিচালক হতে পারেন। তবে পরিচালক না হলে কোন সাধারণ শেয়ারহোল্ডার কোম্পানি পরিচালনায় অংশ নিতে পারেন না।

পাবলিক লিমিটেড ও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির মধ্যে পার্থক্য কি?

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি (PLC) শেয়ারহোল্ডারদের মালিকানাধীন এবং পরিচালকদের দ্বারা পরিচালিত হয়। সাধারণ জনগণ স্টক মার্কেট থেকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির স্টক ক্রয় করতে পারে। একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি (লিমিটেড) প্রকাশ্যে শেয়ার লেনদেন করে না এবং সর্বাধিক পঞ্চাশ শেয়ারহোল্ডারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

লিমিটেড কোম্পানি নিবন্ধন করতে কত সময় লাগে?

সকল নথি এবং ফী জমা দেওয়ার পর ৭ থেকে ১০ কর্ম দিবসের মত সময় লাগে।

এ সঙ্কান্ত বিষয়ে SME Vai এর সেবা সমূহঃ

https://smevai.com/product/e-tin-for-firm/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *