Table of Contents
ব্যবসা শুরু করার জন্য খুবই দরকারি একটি লিগ্যাল ডকুমেন্ট হল ট্রেড লাইসেন্স (Trade License)। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ এবং আইনবিরোধী। তাই প্রত্যেক ব্যবসায়ীর ব্যবসার শুরু করার পর পরই ট্রেড লাইসেন্স করে নেওয়া উচিত।
ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম
সবার প্রথমে নির্ধারিত আবেদন ফরমে আবেদন করতে হবে। আবেদন পত্রের সাথে ৩ কপি ছবি, ভাড়ার চুক্তি পত্র ও ভাড়ার রশিদ, কর পরিশোধের রশিদ সহ কর কর্মকর্তার বরাবর আবেদন করতে হয়। লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে মেমোরেন্ডাম এর কপি দাখিল করতে হয়। আবেদন পত্রের সাথে লিগ্যাল ফি জমা দিতে হবে। পরবর্তীতে লাইসেন্স সুপারভাইজার কর্তৃক সরেজমিনে তদন্ত করে সঠিক পাওয়া গেলে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে থাকে।
ট্রেড লাইসেন্স আবেদন করতে কি কি লাগে?
এক মালিকানা ব্যবসার ক্ষেত্রেঃ
– দোকান /অফিস ভাড়ার সত্যায়িত চুক্তিপত্রের ফটোকপি
– নিজের দোকান হলে ইউটিলিটি বিল এবং হালনাগাদ হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের ফটোকপি
– আবেদনকারির ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের কপি
যৌথ মালিকানার ক্ষেত্রেঃ
– দোকান /অফিস ভাড়ার সত্যায়িত চুক্তিপত্রের ফটোকপি
– নিজের দোকান হলে ইউটিলিটি বিল এবং হালনাগাদ হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের ফটোকপি
– ডিরেক্টরদের ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের কপি
– ২০০০ টাকা জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে পার্টনাশিপের অঙ্গিকারনামা/ শর্তাবলি জমা দিতে হবে
কোম্পানির ক্ষেত্রে
→ অফিস বা দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। জায়গাটি অংশীদারদের কারোর নিজের হলে ইউটিলিটি বিল এবং হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের ফটোকপি।
→ কোম্পানির সার্টিফিকেট অফ ইন-কর্পোরেশন
→ কোম্পানির মেমরেন্ডাম ও আর্টিকেল অফ এসোসিয়েশন
→ ম্যানেজিং ডিরেক্টরের তিন কপি ছবি
→ ম্যানেজিং ডিরেক্টরের জাতীয় পরিচয়পত্র
ফ্যাক্টরি/ কারখানার ট্রেড লাইসেন্স এ কি কি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দরকার?
→ পরিবেশের ছাড়পত্রের কপি
→ প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরি/ কারখানার পার্শ্ববর্তী অবস্থান বা স্থাপনার বিবরণসহ নকশা/ লোকেশন ম্যাপ
→ প্রস্তাবিত ফ্যাক্টরি/ কারখানার পার্শ্ববর্তী অবস্থান বা স্থাপনার মালিকের অনাপত্তিনামা
→ ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র
→ ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এর নিয়ম কানুন মেনে চলার স্বাক্ষরিত অঙ্গিকারনামা ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প
ট্রেড লাইসেন্স করতে প্রয়োজনীয় খরচ ও সময়
ব্যবসার ধরনের উপর ভিত্তি করে যেভাবে লাইসেন্স পরিবর্তিত হয় ঠিক সেভাবেই বিভিন্ন ব্যবসার লাইসেন্সের জন্য প্রয়োজনীয় খরচের মধ্যেও বেশ তারতাম্য ঘটে।
সিটি কর্পোরেশন আদর্শ কর তফসিল, ২০১৬-এর বিধিমালা অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্সের এই খরচ-এর হার সমূহ নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া এর সাথে আকৃতি অনুসারে সাইনবোর্ড ফি, লাইসেন্স বই-এর খরচ ও এগুলোর উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট-এর খরচ আছে। ট্রেড লাইসেন্স-এর আনুষঙ্গিক খরচাদি আবেদন ফর্মে উল্লেখিত ব্যাংক সমূহে জমা দেয়ার মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।
আবেদন ফর্ম জমা দেয়ার দিন থেকে পাঁচ অথবা সাত কর্মদিবস এর মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যাবে।
ট্রেড লাইসেন্স ফি তালিকা
ট্রেড লাইসেন্স করার পদ্ধতি
ধাপ-১: সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে ব্যবসায়িক কেন্দ্রের জন্য সঠিক অঞ্চল নির্ধারণ করা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ভিত্তিক অফিসের ঠিকানা
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ভিত্তিক অফিসের ঠিকানা
ধাপ-২: আই ফর্ম ও কে ফর্ম নামে ট্রেড লাইসেন্স আবেদনের দুটি ভিন্ন ধরনের ফরম আছে। ছোট কিংবা সাধারণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য আই ফর্ম এবং বড় ব্যবসার ক্ষেত্রে কে ফর্ম সংগ্রহ করতে হয়। প্রতিষ্ঠানটি যে অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত সেই অঞ্চলের অফিস থেকেই এই ফর্মগুলো সংগ্রহ করা যাবে, যেগুলোর প্রতিটির দাম ১০ টাকা।
ধাপ-৩: সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে ট্রেড লাইসেন্স-এর ফি ভ্যাটসহ জমা দিয়ে রশিদ সংগ্রহ করতে হবে।
ধাপ-৪: ব্যবসার ধরন অনুযায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন ফর্মটির সাথে ব্যাংকে ফি জমা রশিদটি সংযুক্ত করে স্থানীয় সরকারের অফিসে জমা দিতে হবে।
ধাপ-৫: স্থানীয় সরকারের অধীভূক্ত আঞ্চলিক অফিস থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা ব্যবসায়িক কেন্দ্রটি পরিদর্শন করে অফিসে রিপোর্ট করবেন।
ধাপ-৬: পূর্ববর্তী প্রতিটি ধাপ সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে এই চূড়ান্ত পর্যায়ে ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যাবে সেই আঞ্চলিক অফিস থেকে।
ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন পদ্ধতি
প্রতিটি নতুন ট্রেড লাইসেন্স-এর মেয়াদ থাকে এক বছর। স্বভাবতই ট্রেড লাইসেন্স এর কার্যকারিতা বহাল রাখতে হলে প্রতি বছরই ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়।
ট্রেড লাইসেন্স নতুন করার সময় যে সরকারি ফিগুলো প্রদান করা হয় তা হলো, ট্রেড লাইসেন্স ফি, সাইন বোর্ড ফি এবং এই দুটো মিলে যত টাকা হয় তার উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট। আর ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের সময় এই খরচগুলোর সাথে যোগ হয় উৎস কর, যেটি সিটি করপারেশনের ক্ষেত্রে ৩,০০০ টাকা। ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার ক্ষেত্রে এটি কিছুটা কম হয়।
আপনার লাইসেন্স টি নবায়ন করতে মোট কত খরচ হবে তা আপনি নিজেই হিসেব করে বের করতে পারবেন আমাদের এই Trade License Renewal Fee Calculator ব্যবহার করে।
ব্যবসাকে বৈধকরণের জন্য ট্রেড লাইসেন্স একটি অপরিহার্য সনদ। ট্রেড লাইসেন্স দেয়া এবং এর নবায়ন স্থানীয় সরকারের কর আদায়ের একটি মাধ্যম। এটি ছাড়া যে কোন ব্যবসা প্রতারণার সামিল হবে। এ অপরাধে এমনকি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতারণার হিসেবে দেওয়ানী বা ফৌজদারি মামলাও হতে পারে। তাই সঠিক ও বৈধ ভাবে ব্যবসা পরিচালনায় ট্রেড লাইসেন্স-এর কোন বিকল্প নেই।
ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে আরও কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর
অনলাইনে ব্যবসা করতে কি ট্রেড লাইসেন্স তৈরী করতে হবে?
জী, যেকোন ব্যবসা করতে হলেই ট্রেড লাইসেন্স তৈরী করতে হবে। তবে অনলাইন মাধ্যম যেমন ফেসবুক বা ওয়েবসাইট ভিত্তিক ব্যবসায় করার ক্ষেত্রে আলাদা এফ-কমার্স বা ই-কমার্স নামক কোন ক্যাটাগরি নেই। তবে সেই ক্ষেত্রে আইটি সেক্টর দেখিয়ে আপনি ট্রেড লাইসেন্স করতে পারেন।
ট্রেড লাইসেন্স তৈরীর পর কোন তথ্য ভুল থাকলে তা ঠিক করবো কিভাবে?
নির্দিষ্ট ফি প্রদান করে স্থানীয় অফিসে গিয়ে এফিডেবিটের মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্সের তথ্য পরিবর্তন / সংশোধন করা যায়।
একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে পুরো দেশে ব্যবসা করা যাবে কি
একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে আপনি সারা দেশেই আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারবেন বা সাপ্লাই দিতে পারবেন। তবে আপনার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান যে এলাকায় রয়েছে অর্থাৎ আপনার অফিস যে জায়গায় রয়েছে আপনাকে সেই অফিস এর আওতাধীন এলাকা থেকে আপনার ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স কত দিনে পাওয়া যাবে?
আবেদন ফর্ম জমা দেয়ার দিন থেকে পাঁচ অথবা সাত কর্মদিবস এর মধ্যে ট্রেড লাইসেন্স পাওয়া যাবে।
একটি ট্রেড লাইসেন্স কি একাধিক ব্যবসায় ব্যবহার করা যায়?
না একটি ট্রেড লাইসেন্স শুধু মাত্র একটি ব্যবসার জন্যই প্রযোজ্য অর্থাৎ যে ব্যবসা পরিচালনার জন্য ট্রেড লাইসেন্সটি করা হয় শুধু মাত্র সেই ব্যবসা পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা যাবে অন্য কোন ধরনের ব্যবসার জন্য ব্যবহার করা যাবে না। নতুন কোন ব্যবসা শুরু করলে তার জন্য নতুন ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।
ফেসবুকে পেইজ খুলে ব্যবসায় করছি এর জন্য কোন ক্যাটাগরিতে ট্রেড লাইসেন্স করব?
অনলাইন মাধ্যম যেমন ফেসবুক বা ওয়েবসাইট ভিত্তিক ব্যবসায় করার ক্ষেত্রে আলাদা এফ-কমার্স বা ই-কমার্স নামক কোন ক্যাটাগরি নেই। তবে সেই ক্ষেত্রে আইটি সেক্টর দেখিয়ে আপনি ট্রেড লাইসেন্স করতে পারেন।
ট্রেড লাইসেন্স কি প্রতি বছরই রিনিও করা লাগবে? যদি আমি ব্যবসায় বন্ধ রাখি তাও?
জি হ্যাঁ, আপনাকে প্রতি বছর ট্রেড লাইসেন্স রিনিউ করা লাগবে। আপনি আপনার ব্যবসা বন্ধ করার পর, ট্রেড লাইসেন্স যদি সাসপেন্ড না করেন তাহলে আপনাকে প্রতি বছর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হবে। যদি না করে থাকেন, তাহলে প্রতি মাসে ১০% হারে জরিমানা উক্ত ট্রেড লাইসেন্সের সাথে যুক্ত হবে।
ব্যবসার মালিকানা পরিবর্তন হলে কি নতুন করে ট্রেড লাইসেন্স করা লাগবে?
ব্যবসার মালিকানা পরিবর্তন হলে, ট্রেড লাইসেন্স সংশোধন করে তথ্য হালনাগাদ করতে হবে, নতুন ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে না।
এসএমই ভাই এর মাধ্যমে আপনার ব্যবস্যার ট্রেড লাইসেন্স করিয়ে নিতেঃ
-
Renew Trade License For Dhaka CitySale Product on sale
৳ 2,000.00৳ 1,000.00Rated 5.00 out of 5 based on 6 customer ratings -
New Trade License for Dhaka City৳ 3,500.00Rated 5.00 out of 5 based on 3 customer ratings